সারা বিশ্বব্যাপী দীর্ঘদিন যাবৎ তীব্র বেদনা এবং শারীরিক অক্ষমতায় শত সহস্র মানুষ ভুগছেন, তার জন্য যে কারণটি সবচেয়ে বেশি দায়ী তা হল হাড় এবং গ্রন্থির অবস্থা। মক। ভারতীয়দের মধ্যে গ্রন্থি এবং হাড়ের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলি হল আর্থরাইটিস অর্থাৎ গ্রন্থিবাত, অস্টিওপােরােসিস এবং পিঠে ব্যথা। সময়ের সঙ্গে ক্রমশ আথরাহাস বাতুতে থাকে। গ্রন্থিতে প্রদাহ এবং লালভাব এর প্রধান উপসর্গ। নানা ধরণের আর্থরাইটিস হয়। সবচেয়ে সপরিচিত প্রকারের আর্থরাইটিস হল অস্টিওআর্থরাইটিস – যার সঙ্গে জড়িত আছে কার্টিলেজ অর্থাৎ কোমলাস্থির অবক্ষয়।
কাদের এই বিপদাশঙ্কা আছে?
বয়স, লিঙ্গ বা বর্ণ নির্বিশেষে যে কেউ এতে প্রভাবিত হতে পারে ।
পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি প্রভাবিত হন। সাধারণত বছর 40 এর পরে তারা অস্টিওআর্থরাইটিসে আক্রান্ত হন। হাড় এবং গ্রন্থি সংক্রান্ত এইসব অবস্থার জন্য দায়ী প্রধান কারণগুলি হল বংশগত কারণ, সংক্রমণ। (ব্যাক্টেরিয়া এবং ভাইরাসের) এবং গ্রন্থিতে তরলের অভাব। বয়স বাড়ার সঙ্গে হাড়ের কাঠামাে বদলে যায় এবং হাড়ের টিস্যুর ক্ষয় হতে থাকে তাতে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং হঠাৎ ধাক্কা লাগলে বা পড়ে গেলে ফ্র্যাঙ্ক্ষার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
হাড় এবং গ্রন্থিতে বয়স সংক্রান্ত পরিবর্তন।
নিষ্কিয় জীবনশৈলীর ফলে হাড় ক্ষয়ে যায় ।
মহিলাদের রজোনিবৃত্তি এবং হরমােনে পরিবর্তনের ফলে হাড়ের টিস্যু থেকে খনিজ ক্ষয়ে যায়। পুরুষদের
কয়েকটা হরমােন ক্রমশ কম হতে থাকলে পরবর্তীকালে তা অস্টোপােরােসিসের আকার নেয়।
বয়সের সঙ্গে হাড় ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ হারাতে থাকে।
গ্রন্থিতে প্রলেপের মত যে কার্টিলেজ থাকে তা হাড় এর গদির মত কাজ করে। গ্রন্থির ভিতরে একপ্রকারের
লুব্রিকেট করার তরল (সাইনােভিয়েল ফ্লুইড) গ্রন্থির অবাধ নাড়াচাড়ায় সাহায্য করে ।
বয়সের সঙ্গে গ্রন্থির নাড়াচাড়া করার ক্ষমতা কম এবং অনমনীয় হয়ে যায় কারণ গ্রন্থির ভিতরকার লুব্রিকেট
করার তরল কম হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কার্টিলেজের পুরুত্ব কম হয়ে যায়।
তাছাড়া কোমলাস্থিও ক্রমশ ছােট হয়ে যায় ও নমনীয়তা হারিয়ে ফেলে তাই গ্রন্থি অনমনীয় মনে হয়। হাড় ও গ্রন্থিতে বয়স সংক্রান্ত এইরূপ নানা পরিবর্তনের কারণ হল ব্যায়ামের অভাব। গ্রন্থির নাড়াচাড়ার ফলে তরল প্রবাহ বজায় থাকে। পুষ্টিবর্ধক সাপ্লিমেন্ট আর্থরাইটিস, অস্টোপােরােসিস এবং তার সঙ্গে জড়িত বেদনার উপশমে সাহায্য করে। সাপ্লিমেন্ট ছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ, ফল এবং শাকসজি খাওয়া হলে সুস্থ হাড় তৈরি হয়।
সুস্থ হাড় এর জন্য 7 টা টিপস
ঘুমের সময় ক্ষয়ক্ষতি সারিয়ে তুলুন
আপনার গদি এমন হওয়া উচিত যাতে আপনার মেরুদন্ড বিশ্রামের জন্য যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ্য এবং স্থিরতা পায়, তাতে চাপ। না পড়ে।
ব্যায়াম করুন
আপনার গ্রন্থিগুলির চারিপাশের মাংসপেশী মজবুত করার জন্য যােগব্যায়াম এবং সাঁতারের মত কম প্রভাব। ফেলার ব্যায়াম করুন।
স্ট্রেচিং করুন
লক্ষ্য রাখবেন আপনি যেন নাড়াচাড়া। করার যথেষ্ট জায়গা পান। 20-30 সেকেন্ড যাবৎ স্ট্রেচিং করুন।
ভিটামিন C খান
কার্টিলেজ মজবুত রাখার জন্য চাই কোলাজেন, এই কোলাজেন তৈরি করতে আপনার শরীরকে সাহায্য করে ভিটামিন C। পেঁপে, শিমলা মরিচ, ফুলকপি এবং কমলালেবু খান।
ভালো জুতাে কিনুন
ভিতরে কুশন বা গদি আঁটা জুতাে খুঁজে নিন যাতে পায়ের পাতায় সমানভাবে আপনার ওজনের চাপ পড়ে।
ধূমপান বন্ধ করুন
তামাক আপনার মেরুদন্ডের চারিপাশের রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।
ডাক্তার দেখান
স্বাস্থ্যকর জীবনশৈলী গড়ে তােলা এবং বেদনা দূর করার জন্য অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ আপনার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।